সাইন আপ করুন
লগিন করুন
পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? আপনার ইমেইল এড্রেস দিন। ইমেইলের মাধ্যমে আপনি নতুন পাসওয়ার্ড তৈরির লিংক পেয়ে যাবেন।
আপনি কেন মনে করছেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই ব্যক্তিকে রিপোর্ট করা উচিৎ?
দৃষ্টিভ্রম বা Optical Illusion এর একটি উদাহরণ দিন।
কিছু অপটিক্যাল বিভ্রম শারীরবৃত্তীয় প্রকৃতির। এই ধরণের বিভ্রমগুলি আরও ভালভাবে বোঝার জন্য আপনাকে নীচের এই মাচ ব্যান্ড ইলিউশনের ছবিটি দেখতে হবে। এই ছবির মাঝখানের লাইনটি একটি কঠিন রঙের কিন্তু রেটিনার পরিস্রাবণ ক্ষমতার কারণে, লাইনের ডান দিকটি লাইনের বাম পাশের চেয়ে গাঢ় বলে মনে হচ্ছে। নীচে নিজেরবিস্তারিত পড়ুন
কিছু অপটিক্যাল বিভ্রম শারীরবৃত্তীয় প্রকৃতির। এই ধরণের বিভ্রমগুলি আরও ভালভাবে বোঝার জন্য আপনাকে নীচের এই মাচ ব্যান্ড ইলিউশনের ছবিটি দেখতে হবে। এই ছবির মাঝখানের লাইনটি একটি কঠিন রঙের কিন্তু রেটিনার পরিস্রাবণ ক্ষমতার কারণে, লাইনের ডান দিকটি লাইনের বাম পাশের চেয়ে গাঢ় বলে মনে হচ্ছে।
নীচে নিজের জন্য এটি পরীক্ষা করুন।

সংক্ষেপে দেখুনইংরেজিতে ছাপা প্রথম বইয়ের নাম কি ছিল ?
ইংরেজিতে ছাপা প্রথম বইয়ের নাম ছিল দি রেকুইয়েল অব দি হিস্টোরিয়েস অব ট্রয় (The Recuyell of the Historyes of Troye)। এই বইটি ছাপা হয় ১৪৭৫ সালে আর লেখক ছিলেন উইলিয়াম ক্যাক্সটন।
ইংরেজিতে ছাপা প্রথম বইয়ের নাম ছিল দি রেকুইয়েল অব দি হিস্টোরিয়েস অব ট্রয় (The Recuyell of the Historyes of Troye)। এই বইটি ছাপা হয় ১৪৭৫ সালে আর লেখক ছিলেন উইলিয়াম ক্যাক্সটন।
সংক্ষেপে দেখুনএকটি ঘোর লাগানো ছবি দেখাতে পারবেন কি?
ঘোর লাগানো ছবি
ঘোর লাগানো ছবি
সংক্ষেপে দেখুনযেকোন ধরণের আসক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায় কিভাবে?
যেকোন ধরণের আসক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায় কিভাবে জানার আগে আমাদের জানতে হবে আসক্তি কি এবং যে কোন বিষয়ে মানুষের মাঝে আসক্তি তৈরি হয় কেন? কানাডার একজন চিকিৎসক ডা. গাবোর মেইটের বিশ্বাস সব ধরণের আসক্তির পেছনে থাকে মানুষের ভেতরে প্রোথিত ভীতি কিংবা যন্ত্রণা। যে কারণে তার বিশ্বাস মাদকাসক্ত ব্যক্তির প্বিস্তারিত পড়ুন
যেকোন ধরণের আসক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায় কিভাবে জানার আগে আমাদের জানতে হবে আসক্তি কি এবং যে কোন বিষয়ে মানুষের মাঝে আসক্তি তৈরি হয় কেন?
কানাডার একজন চিকিৎসক ডা. গাবোর মেইটের বিশ্বাস সব ধরণের আসক্তির পেছনে থাকে মানুষের ভেতরে প্রোথিত ভীতি কিংবা যন্ত্রণা।
যে কারণে তার বিশ্বাস মাদকাসক্ত ব্যক্তির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সেই সঙ্গে চিকিৎসা পদ্ধতিও হওয়া উচিত পরিবর্তিত।
ডা. মেইট তার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখালেখির জন্য পরিচিত। এছাড়া উত্তর আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি মাদকাসক্তি প্রকোপ যেখানে সেই কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে রাসায়নিক জাতীয় পদার্থ অপব্যবহারের রোগীদের নিয়ে কাজ করার জন্য বিখ্যাত।
২০১৮ সালে তার কাজের জন্য তিনি কানাডার সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান অর্ডার অব কানাডা লাভ করেন।
তিনি বিশ্বাস করেন, যে কোন আসক্তির পেছনেই প্রবল ভীতি বা তীব্র যন্ত্রনার কোন স্মৃতি থাকে।
এর কারণ কী? বিষয়টি নিয়ে ডা. মেইটের ব্যাখ্যা শোনা যাক।
ছবির ক্যাপশান,
ডা. গাবোর মেইট
‘আমরা আসল কারণ দেখছি না‘
আসক্তির কারণ অনুসন্ধান করতে চাইলে প্রথমেই আমাদের বুঝতে হবে, আসক্তির ফলে আমরা কী পাই।
সাধারণত মানুষ বলে, “এটা আমাকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়, মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখে, যে কোন পরিস্থিতিতে এক ধরণের নিয়ন্ত্রণ করতে পারার অনুভূতি হয়। মনে হয় সত্যিকারের বেঁচে আছি, তুমুল উত্তেজনা, তীব্র ভালো লাগা ইত্যাদি”
অন্য কথায় আসক্তি মানুষের কিছু বিশেষ প্রয়োজন মেটায় যা তার জীবনে পূরণ হচ্ছিল না।
এসব পর্যায়ে মনোযোগ না পাওয়া, একাকীত্ব আর মানসিক চাপের কারণে মানুষ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।
মাদকাসক্তদের সংখ্যা বিচার করলে দেখা যায়, যাদের শৈশব খুব খারাপ কেটেছে, তাদের বেশির ভাগের মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার আশংকা থাকে।
ছবির ক্যাপশান,
মনোযোগ না পাওয়া, একাকীত্ব আর মানসিক চাপের কারণে মানুষ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।
এর মানে হলো, আসক্তির পেছনে যন্ত্রনা এবং জটিল শৈশব কাজ করে। এর অর্থ হচ্ছে, যাদের শৈশব স্বাভাবিক ছিল না, তারা সবাই আসক্ত হবে–তা নয়। বরং যারা আসক্ত তাদের সবার শৈশব কষ্টে কেটেছে।
আসক্তি দূরীকরণের চিকিৎসার জন্য শাস্তি, ধমকাধমকি বা সমালোচনা নয়, বরং প্রয়োজন প্রচুর ধৈর্য, অনেকের অনেক সাহায্য এবং ব্যাপক বোঝাপড়ার প্রয়োজন।
আসক্তি ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী যত চিকিৎসা আর পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার মধ্যে অনেকগুলোই ব্যর্থ হয়েছে।
এখন প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে আমরা কি সত্যিই পরিস্থিতি বুঝতে পারছি? হয়তো না।
আসক্ত মানুষটির ভোগান্তিটা আমরা একেবারেই খেয়াল করছি না।
‘লোকে ইচ্ছা করে আসক্ত হয় না‘
ছবির ক্যাপশান,
ডা. মেইট বলছেন লোকে ইচ্ছা করে আসক্ত হয় না
আসক্তি নিয়ে লোকের মধ্যে চালু একটি ধারণা হচ্ছে ইচ্ছা করে বা শখের বশে ওই পথে গেছে। কিন্তু অধিকাংশ সময় আসল ঘটনা সেটা নয়।
আমাদের চারপাশের সমাজের কাঠামোটাই এমন যে কোন ব্যক্তি আসক্ত হলে তাকে ধরে শাস্তি দাও।
“আমি এমন কাউকে চিনি না যে এক সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবলো, আজ থেকে আসক্ত হয়ে যাব!”
এটা পছন্দের ব্যপার নয়, এটা হয় মানসিক যন্ত্রনা থেকে পালানো বা বাঁচার জন্য। আর কেউই যন্ত্রনার মধ্যে থাকতে ভালোবাসে না।
‘আসক্তি জেনেটিক না‘
জেনেটিক বা বংশ পরম্পরায় কেউ আসক্ত হয় না।
ছবির ক্যাপশান,
বংশ পরম্পরায় কেউ আসক্ত হয় না
মাদকাসক্তি নিয়ে সমাজে প্রচলিত আরেকটি ধারণা হলো, এটা বুঝি বংশ পরম্পরায় হয়।
ডা. মেইটের প্রশ্ন – যদি আমি মাতাল হই, আর সারাক্ষণ আমার বাচ্চাকে গালি দিতে থাকি, আর তা থেকে বাঁচার জন্য সে মদ খেতে চায়, তাহলে একে কি বংশ পরম্পরায় মাতাল বলা যাবে?
এটা বংশ গতির সমস্যা নয়, সমস্যা পারিপার্শ্বিকতার।
ফলে এক্ষেত্রে পরিবারের দায়িত্বশীল এবং যৌক্তিক আচরণ করার প্রয়োজন সবার আগে। এরপর সমাজের অন্যদেরও পাশের মানুষটির জন্য সহমর্মিতা বোধ করার প্রয়োজন রয়েছে।
সমাজে বহু ধরণের আসক্তি
আরেকটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, শুধু যারা নেশাদ্রব্য দিয়ে নেশা করে তারাই আসক্ত।
কিন্তু সমাজের বিশেষ কোন সংস্কৃতির কারনেও এটা হতে পারে।
ছবির ক্যাপশান,
আসক্তি দূর করতে সমাজের সবার সাহায্য লাগে
কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় কিংবা সংস্কৃতিগতভাবে পানীয় জাতীয় অ্যালকোহল গ্রহণের চল আছে। কোন কোন গোষ্ঠী নিজেরাই তৈরি করে এমন দ্রব্য।
এটা তাদের সংস্কৃতি, ফলে এখানে আসক্তির অন্যান্য চিকিৎসা কাজে আসবে না।
‘আপনি সংগীতেও আসক্ত হতে পারেন‘
ডা মেইটের মতে, আসক্তি বলতে আমরা সাধারণভাবে যা বুঝি তা হলো এক ধরণের সাময়িক প্রশান্তির জন্য মানুষ বারবার যার দ্বারস্থ হয়। এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে তার ভেতরে সেটার জন্য আবারো চাহিদা তৈরি হয়।
এটা সিগারেট হতে পারে, ড্রাগ হতে পারে, মদ জাতীয় বস্তু হতে পারে। হতে পারে যৌনতা, জুয়া, শপিং, কাজ, রাজনৈতিক ক্ষমতা, ইন্টারনেটে গেম খেলা—এমন অনেক কিছুই।
কেউ কাজ করেও একই ধরণের আনন্দ পেতে পারেন।
কিন্তু মানসিক প্রশান্তি বা তৃপ্তির জন্য মানুষ সঙ্গীতের দ্বারস্থও হয়।
ছবির ক্যাপশান,
ডা. মেইট একদিন আট হাজার ডলারের সিডি কিনেছিলেন
আসক্তি হয়তো মানুষের অবচেতনে লুকনো এমন এক বোধ যে তিনি হয়ত যথেষ্ঠ ভালো নেই। হয়তো তাকে কিছু করে প্রমাণ করে দেখাতে হবে এবং হয়তো কেউ তাকে ভালবাসে না।
“তখন কেউ কেউ কাজের ভেতরে ডুব দেয়–যেমন আমি”, বলছিলেন ডা. মেইট।
“আমি যখন আমার মাদকাসক্ত রোগীদের আমার গল্প বলি, তারা বলে হ্যাঁ ডাক্তার তুমি আমাদের মতোই। আসলে শেষ বিচারে আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মতো।”
এখন জানা যাক এর থেকে মুক্তির উপায় কি?
বর্তমানে স্মার্টফোন হাতে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন চেক করে সকাল শুরু হয় বেশির ভাগ মানুষের । রাতে ঘুমাতে গেলেও একই কাজ। এককথায় আমাদের পুরো জীবনটা এখন আটকে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ার কারাগারে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষের মধ্যেও অস্থিরতা বেড়ে গেছে। তাহলে কীভাবে কমানো সম্ভব এই আসক্তি?
আমেরিকান সোসাইটি অব অ্যাডিকশন মেডিসিন সংস্থার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয় , আসক্তি হচ্ছে এমন এক আচরণ, যার নেতিবাচক পরিণতি সত্ত্বেও মানুষ তাতে প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হয়ে ওঠে । ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ৪৩ ভাগ আমেরিকান ক্রমাগত সোশ্যাল মিডিয়ায় আবিষ্ট থাকেন। যাদের মাঝে ২০ ভাগ মানুষের মানসিক অবসাদের উৎস হচ্ছে এই সোশ্যাল মিডিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের আসক্তিকে তুলনা করা হচ্ছে ড্রাগ বা অ্যালকোহলের সঙ্গে । কারণ, উভয় ক্ষেত্রেই মানুষের মস্তিষ্কে ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে যায় । ফলে এসবে মানুষের আরও বেশি আসক্তি হওয়ায় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে । তবে চাইলেই নিজেকে এই সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে দূরে রাখা যায় ।
২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় , বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা গড়ে ১৪৪ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করে থাকেন । অথচ গবেষকেরা বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দৈনিক ৩০ মিনিট ব্যয় মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সর্বোত্তম। মাদক বা অ্যালকোহল আসক্তি থেকে পরিত্রাণের জন্য চিকিৎসা আছে । কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি এক রকম নয়। একমাত্র ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ও নিজ উদ্যোগে কিছু কৌশলই পারে সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে একজন মানুষকে দূরে রাখতে।
সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে বিরত থাকতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লিন স্টার্নলিচের দিক নির্দেশনা হতে পারে বেশ কার্যকর।
২০১৯ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে , কিছু ছাত্র পাঁচ দিন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে বিরত ছিল। যা তাঁদের মানসিক স্থিতি ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই এক ঘণ্টা বা এক সপ্তাহ বিরত থাকার অভ্যাস এই আসক্তি বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে তুলতে পারে।
বেশির ভাগ মানুষই অবচেতনভাবেই ক্রমাগত সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারেন। এ ক্ষেত্রে অ্যাপ মুছে ফেলা বা সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিলে একজন ব্যবহারকারীর আসক্তি কমে যেতে পারে । কারণ, মোবাইল স্ক্রিনে চোখ পড়লে সোশ্যাল মিডিয়া আইকন দেখা না গেলে স্বাভাবিকভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা যাবে।
নিজেকে সময় বেঁধে দেওয়া হতে পারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকার আরেকটি ভালো উপায়। বেশির ভাগ ফোন এবং ট্যাবলেটে দেখা যায় কোনো নির্দিষ্ট অ্যাপে কত সময় ব্যয় করা হচ্ছে । নিজেকে সময় বেঁধে দিন , দৈনিক কত সময় আপনি এতে ব্যয় করবেন । এত পদ্ধতিতে প্রতিনিয়ত অভ্যাস গড়ে তুললে এতে আসক্তি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে । এ ক্ষেত্রে কোনো অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায় । যা বেঁধে দেওয়া সময় অতিক্রম হওয়ার পর ওই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনাকে বের করে দেবে।
শখের কাজ গুরুত্ব দেওয়া বা অন্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেও আপনি নিজেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে রাখতে পারেন। অন্যান্য ভালো লাগার কাজ গুলোয় বেশি সময় ব্যয় এই আসক্তি বেশ কমিয়ে আনবে। স্টার্নলিচ বলছেন, অবসর সময়ে এমন কোনো ভালো কাজে ব্যস্ত থাকা উচিত, যা আপনি উপভোগ করেন । এতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি কমে যাবে । যা ব্যক্তি জীবন ও সামাজিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে ।
এ প্রক্রিয়াগুলি অনেকের ক্ষেত্রে পুরোপুরি কাজ নাও করতে পারে । সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি কমাতে এ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি নিজেকে দায়িত্বশীল হতে হবে । এ নিয়ে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের শিশু ও কিশোরী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেহা চৌধুরী বলেছেন , নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকা কিছু লোকের জন্য কার্যকর হতে পারে, কিন্তু অন্যদের জন্য নয়। তাঁর মতে, এই বিরতি কার্যক্রম সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারী দিকগুলো থেকে মানুষ বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। তা ছাড়া অনেকের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকা এতে আসক্তি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে ।
বরং তাঁর পরামর্শ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারার সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে। সে সঙ্গে পরিবারের লোকজন ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। তাঁদের সঙ্গে নিজের পরিকল্পনা শেয়ার করতে হবে। ফলে কোনো ভুল কাজ হলে , তারা আপনাকে সহজেই তা শুধরে দিতে পারবেন । কারণ , একা কোনো অভ্যাস ত্যাগ করা খুব কষ্টসাধ্য।
বর্তমানে প্রযুক্তির সঙ্গে আমরা এত বেশি সম্পর্কিত যে, কিছুক্ষণ এ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে আমরা চিন্তায় পড়ে যাই; এই বুঝি কত কিছু মিস করে গেলাম। এর ফলে কোনো নোটিফিকেশন বা অ্যালার্ট ছাড়াই কিছু মানুষ অন্তত ১৫ মিনিটে একবার করে তাদের ফোন চেক করেন।
ছবি: টিওয়াইএন
মোবাইল ফোনে অধিক সময় ব্যয় করা কেবল সময়ের অপচয় নয়, মানসিকভাবে ক্লান্তিকরও বটে। মানসিক স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার প্রায়ই নেতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। তাই স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি কমানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা এবং সেই অনুযায়ী কমিয়ে ফেলা অবশ্যই একটি ভালো সিদ্ধান্ত।
ফোন ব্যবহারের অভ্যাস কমানো উচিত বলে মনে করেন কি?
কত ঘন ঘন এবং কতক্ষণ ধরে ফোন ব্যবহার করছেন সেটা ট্র্যাক করার বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। ফোন খুব বেশি ব্যবহার করছেন এমনটা পুরোপুরি বিশ্বাস না হতে চাইলে অ্যাপের মাধ্যমে স্মার্টফোনে স্ক্রিনটাইম ডেটা দেখেও আসক্তি কমাতে পারেন। এ ছাড়া ফোন আসক্তি কমাতে যে ব্যবস্থাগুলো নিতে পারেন, সেগুলো হলো-
নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন
আপনার ফোনে যখন একের পর এক নোটিফিকেশন আসার শব্দ বন্ধ হবে, তখন ফোনের আসক্তি উপেক্ষা করা কিছুটা সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে কাস্টমাইজ সেটিংস অপশনে গিয়ে অফিসের বা খুব বেশি প্রয়োজনীয় মানুষের ছাড়া বাকিদের নোটিফিকেশন অফ করে রাখা যেতে পারে। এতে আপনার ফোনের প্রতি আসক্তি কিছুটা কমতে পারে।
ফোনে রাখুন একটি রাবার ব্যান্ড
অবচেতন মনে ফোন ব্যবহার বন্ধ করতে ফোনের চারপাশে একটি রাবার ব্যান্ড জড়িয়ে নিতে পারেন। এতে ফোন ব্যবহারের সময় সেটিতে হাত পড়লে ব্যবহার কমানোর কথা মনে পড়তে পারে। এ ছাড়া রাখতে পারেন কোনো স্ক্রিনসেভার। এটি করলে উদ্দেশ্যহীনভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের সময় বাঁচবে।
অ্যালার্ম ঘড়ির ব্যবহার
মোবাইল ফোনটি অ্যালার্মের কাজে ব্যবহার করলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এলার্ম বন্ধ করে প্রথমে অপ্রয়োজনে মেসেঞ্জার বা মেইল বক্স চেক করার সম্ভাবনা কমে যাবে। তাই অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করলে ফোন ব্যবহার ছাড়াই অতিরিক্ত কিছু সময় বাঁচানো যায়। এ ছাড়া ভিন্ন একটি রুমে ফোন চার্জে দেওয়া এবং সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে ফোন চেক করা যেতে পারে।
গো কোল্ড তুর্কি
এর মাধ্যমে মূলত অবিলম্বে কোনো আসক্তি কমানোকে বোঝানো হয়। বিশেষজ্ঞরা ফোন ব্যবহার না করে ৩ দিন কাটানোর পরামর্শ দেন। যা মাত্রাতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের অভ্যাস কমাতে সাহায্য করে। প্রথমে শুধু কল এবং এসএমএস করার মাধ্যমে এটি ব্যবহারে সহনশীলতা এনে, চাইলে এরপর ধীরে ধীরে অতিরিক্ত অন্যান্য কাজগুলো করা শুরু করতে পারেন।
কিছু সময় প্রযুক্তি থেকে দূরে
যদি ৩ দিন ফোন ছাড়া বেঁচে থাকার চিন্তা করতে না পারেন, তাহলে অন্তত বাসায় ফোন-ফ্রি সময় নির্ধারণ করুন (চাইলে অন্যান্য ডিজিটাল গ্যাজেটও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন)। সেটা হতে পারে প্রতি রাতের খাবারের ১ বা ২ ঘণ্টা আগে বা প্রতি রোববার বিকেলে। এর পরিবর্তে বেড়াতে যাওয়া, কার্ড খেলা, বোর্ড গেইম বা এমন কিছু করা যা সরাসরি আলাপ এবং যোগাযোগের সুযোগ করে দেয়।
অফ লাইনেই করুন আনন্দের পরিকল্পনা
মোবাইল সরিয়ে বই পড়া কিংবা নিজের পোষা প্রাণীকে পার্কে নিয়ে যাওয়ার মতো কিছু সাধারণ কাজ করা যায়। এসবের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করলেও চলে। তার পরিবর্তে, কিছু বন্ধু বা প্রতিবেশীকে কফি খাওয়ার বা জগিং করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো যায়। সরাসরি দেখাও করা যায়। তাদের জানান, আপনি ফোনের ব্যবহার সীমিত করেছেন এবং তারাও চাইলে অনুসরণ করতে পারে।
নো–ফোন জোন তৈরি করুন
বিশ্রামের সময় বাইরে সব জায়গায় ফোন নিয়ে যাওয়া মোটেও ভালো কিছু না। ফোনকে জীবনের কিছু কিছু অংশ থেকে দূরে রাখা উপকারী হতে পারে। বিশেষত, মৌলিক স্বাস্থ্যবিধির কারণে। যেমন: মিটিং, বাচ্চাদের সঙ্গে খেলার সময় এবং গাড়ি চালানোর সময়। অল্প সময়ের জন্য হলেও এগুলো মোবাইল ছাড়া মানিয়ে নেওয়ার ভালো পদ্ধতি।
ডু নট ডিস্টার্ব মুড
প্রায় সব মোবাইল ফোনেই ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ অপশন থাকে। যা প্রতিদিন একটি পূর্বনির্ধারিত সময়ে মোবাইলে ফাংশনের কিছু বৈশিষ্ট্য সীমিত করে দেয়। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা এবং মধ্যরাতের পরে কল এবং এলার্টগুলো বন্ধ করা যায়।
যতটা সম্ভব কম অ্যাপস রাখুন
মোবাইল গেমসগুলো আপনাকে বারবার মোবাইলে ফিরিয়ে আনে, যদি সেগুলো ডিলিট না করা হয়। বরং আপনি কম্পিউটারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন এবং ফোন, টেক্সট ও ই-মেইলের জন্য ফোন ব্যবহার করতে পারেন।
সহায়ক সরঞ্জাম
কিছু অ্যাপস নির্দিষ্ট সময়ে বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে ফাংশন লক করে আপনার ফোন ব্যবহার সীমিত করতে পারে। আবার কিছু অ্যাপস প্রতিদিন ৫ হাজার কদম হাঁটার কিংবা এ জাতীয় কাজের জন্য উৎসাহিত বা পুরস্কৃত করে।
প্রত্যাশা নিয়ন্ত্রণ
আপনি ফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন কিন্তু উদ্বিগ্ন এটা ভেবে যে, অন্যরা এটা কীভাবে দেখবে, অভদ্রতা হয়ে যাবে কি না। এ ক্ষেত্রে সরাসরি অন্যদের জানান, ফোনের ব্যবহারের কমানোর চেষ্টা করছেন বলেই রেসপন্স করতে সময় লাগছে।
‘ডাম্বফোন‘ বা সাধারণ কী–প্যাড মোবাইলের ব্যবহার
ফোন যদি হয় ছোটখাট একটি কম্পিউটার, ব্যবহার তো করতে মন চাইবেই। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার কমাতে একটি কী-প্যাড ফোন যা দিয়ে কেবল কল এবং এসএমএস পাঠানো যায় কিন্তু অ্যাপ ডাউনলোড বা ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ নেই এ ধরনের ফোন ব্যবহার করতে পারেন।
মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার করতে শেখাও হতে পারে জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। নিজেকে প্রযুক্তির খাঁচায় আবদ্ধ না রেখে চারপাশ উপভোগ করা উচিত।
বর্তমানে চলমান অনেক সামাজিক ব্যাধির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাধি হল মাদকাসক্তি। অনেক পরিবারই এই ব্যাধির ভুক্তভোগী। একটি পরিবারের কোন একজন ব্যক্তি মাদকাসক্ত হলে, তা শুধু ঐ ব্যক্তিকেই নয় বরং পুরো পরিবারকেই নানারকম সমস্যার সম্মুখীন করে তোলে। আর এই সমস্যাগুলো থেকে উঠতে গেলে প্রথম যা দরকার সেটা হল, মাদকাসক্ত ব্যক্তির চিকিৎসা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবারের কোনো ব্যক্তি মাদকাসক্ত হলে, পরিবার তার আরোগ্যের জন্য তাকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করে দেয়। কিন্তু এমন অনেক পরিবার আছে যারা অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল অথবা তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিই হয়তো মাদকাসক্ত। সেক্ষেত্রে তারা হয়তো মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করতে পারছে না। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে, মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তার পরিবার যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে মাদকের আসক্তি থেকে মুক্ত হতে পারে। আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছে, যারা নতুন নতুন আসক্তিতে জড়িয়ে পরেছে। কিন্তু তারা চায় আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে, পরিবারকে কষ্ট না দিতে।
এইসমস্ত পরিস্থিতিতে, যে উপায় বা পদক্ষেপগুলো আপনাকে মাদকাসক্তি থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা করবে, সেইরকম কিছু উপায় এখানে তুলে ধরা হল:
১) মেনে নিন আপনি অসুস্থ
মাদকাসক্তি থেকে নিরাময়ের প্রথম উপায়ই হচ্ছে, আপনাকে মেনে নিতে হবে আপনি অসুস্থ অথবা আপনার একটি মারাত্মক সমস্যা আছে, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এবং সুস্থ হবার জন্য আপনাকে আপনার ভিতরে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করতে হবে।
২) আসক্তির নেতিবাচক দিকগুলো লিখে ফেলুন:
নেতিবাচক দিকগুলো লিখার একটা উদ্দেশ্য হল, এই তালিকা আপনাকে আপনার সমস্যা সমাধানে এবং ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে রাখতে সহযোগিতা করবে। তালিকাটি হতে পারে এমন-
-মাদকাসক্তির ফলে আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে
-ভালবাসার সম্পর্কগুলো ভেঙে যাচ্ছে
-মানসিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন- হতাশা, দুঃশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে
-বিভিন্ন জায়গায় ধার করে মাদক গ্রহণে এখন আপনি লজ্জায় পড়ছেন, ইত্যাদি।
৩) ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি তালিকা তৈরি করুন:
মাদক ত্যাগ করলে আপনার জীবনে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে তার একটি তালিকা তৈরি করুন। যেমন-
-আপনি স্বাধীন অনুভব করবেন
-আত্মীয় বা প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতে পারবেন
-অর্থ সঞ্চয় করতে পারবেন
-আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন, ইত্যাদি।
৪) কেন আপনি মাদক ত্যাগ করতে চান তার একটি তালিকা তৈরি করুন:
এটা করতে আপনি আপনার বন্ধু বা পরিবারের সহযোগিতা নিতে পারেন। এই তালিকা আপনাকে আপনার মনোবল বাড়াতে সহযোগিতা করবে। তালিকাটি হতে পারে এমন-
-আপনি খুব ভাল সন্তান, স্বামী বা স্ত্রী হতে চান
-আপনি আপনার সন্তানের ভাল বাবা বা মা হতে চান
-আপনি আপনার পরিবারের অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে চান
-আপনি স্বাভাবিক জীবন ফেরত চান, ইত্যাদি।
৫) পরিকল্পনা তৈরি করুন:
পরিকল্পনা করা যেতে পারে কিছু ধাপে ধাপে-
-একটি দিন নির্ধারণ করুন যেদিন থেকে আপনি আর মাদক গ্রহণ করবেন না।
-নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার জন্য ব্যক্তিগত ও পেশাগত সহযোগিতা নিন। যেমন: পরিবার ও প্রিয়জনের সাথে বেশি বেশি সময় কাটান, ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকুন, কাউন্সেলর বা সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে কাউন্সেলিং সেবা নিন। তারা আপনাকে আপনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে।
-মেডিটেশন করুন, ব্যায়াম করুন, নিয়মিত খেলাধুলা করুন। এগুলো আপনাকে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
-প্রতিদিন নামাজ পড়ুন, ধর্মচর্চা করুন। ধর্মের নির্দেশনাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। এতে আপনি মানসিক শান্তি ও মনোবল পাবেন এবং আপনার উদ্দেশ্য আরো শক্ত হবে।
-আপনার পরিকল্পনার কথা পরিবার ও বন্ধুদের বলুন। যাতে করে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
-আপনার যেসমস্ত বন্ধুরা মাদকাসক্ত, তাদের কাছ থেকে ও মাদক গ্রহণের স্থান থেকে দূরে থাকুন।
-বেশি বেশি মজাদার মুভি দেখুন, গান শুনুন।
-বেশি বেশি পানি পান করুন, গোসল করুন, নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ করুন।
-নিজেকে ব্যস্ত রাখুন সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে এবং ইতিবাচক চিন্তা করুন।
-যে অর্থ আপনি মাদকের জন্য ব্যয় করতেন তা পরিবার বা প্রিয় বন্ধুর জন্য ব্যয় করুন।
৬) নিজেকে মূল্যায়ন করুন:
যে আচরণগুলো আপনি প্রতিদিন করবেন, সেগুলো নেশা থেকে দূরে থাকার ৩০ দিন পর অভ্যাসে পরিণত হবে। এই অভ্যাসগুলোর ইতিবাচক দিকগুলো লিখে ফেলুন এবং ভাল অভ্যাসগুলো চালিয়ে যান আগামী ৩০ দিন।
৭) হয়তো আপনি মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত হয়েছেন, তখন আবার নতুন করে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে একদিনের জন্যও মাদক গ্রহণ না করাই ভাল।
এটা সত্যি যে, যেকোন ধরনের নেশা বা আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেই নিজেকে সহযোগিতা না করেন তাহলে অন্য কেউ আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবে না। তাই আপনাকেই আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত হবার জন্য। আর এই পথে হাটতে গিয়ে আপনি ব্যর্থ হতে পারেন, কিন্তু তার মানে এই না আপনি আর চেষ্টা করবেন না।
কথায় আছে, ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’। আবার প্রথম প্রচেষ্টাতেই আপনি সফলও হয়ে যেতে পারেন। আর এই একটি প্রচেষ্টাই আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে।
একটা চমৎকার উদাহরণের সাহায্যে মুক্তির উপায়টা বাতলে দিলে কেমন হয়!
চলুন শুরু করা যাক,
আসরের নামাজ হয়ে গেছে বেশ কিছুক্ষণ হলাে , হলুদ রােদ নরম হয়ে কমলা হতে শুরু করেছে । অনেক কমলা রঙের রােদে ভরে গেছে মসজিদের পাশের খেলার মাঠটা । মাঠের সবুজ ঘাসের বুকে ফুটে থাকা সাদা ঘাসফুলগুলাের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মন কেমন জানি উদাস হয়ে গিয়েছিল । ঘাের কাটল চিৎকার চেঁচামেচিতে । মসজিদের খাদেম সাহেবের ছােট্ট ছেলেটা ঘুড়ি ওড়ানাের চেষ্টা করছে মাঠে । খাদেম সাহেব লাল টুকটুকে ঘুড়িটা ধরে আছেন , ছেলে যখন নাটাই ধরে দৌড় মারছে তখন তিনি ছেড়ে দিচ্ছেন ঘুড়ি ।
লাল টুকটুকে ঘুড়িটা নাক উঁচু করে বাতাসে ভেসে আকাশে উঠতে চাচ্ছে , কিন্তু কিছুক্ষণ পর গােত্তা খেয়ে সােজা নেমে আসছে মাটিতে । বেশ কয়েকবার চেষ্টা করার পর অবশেষে লাল ঘুড়িটা উড়তে পারল , পারল আকাশে ভেসে থাকতে ।
যেকোনাে আসক্তি কাটিয়ে ওঠা অনেকটা আকাশে ঘুড়ি ওড়ানাের মতাে বা ছােটবেলায় হাঁটতে শেখা কিংবা সাইকেল চালানাে শেখার মতাে । অনেক বার পড়ে যাওয়ার পর , হোঁচট খাবার পর , অনেক চেষ্টার পর তবেই – না সাইকেল চালানাে শেখা যায় , ঘুড়িটা ডানা মেলে আকাশে । সে রকম আপনি একদিনেই , একবারে আসক্তি ছাড়তে পারবেন না — সময় লাগবে , লাগবে অনেক চেষ্টা আর দৃঢ় মনােবল ।
“জলে না নামিলে কেহ শিখে না সাঁতার,
হাঁটিতে শিখে না কেহ না খেয়ে আছাড়”।
দিন শেষে লড়াইটা আপনার নিজের । আমরা হয়তাে আপনার হাতে তুলে দেবাে ঢাল – তলােয়ার , আপনার বন্ধু হয়তাে আপনায় পরিয়ে দেবে বর্ম আর শিরস্ত্রাণ , কিন্তু আসক্তির বিরুদ্ধের ডুয়েলটা লড়তে হবে আপনাকেই ।
আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় একমাত্র আপনি এবং আপনার মন নিজেই । তো আপনার মনকে আপনি কন্ট্রোল করুন , মন যেন আপনাকে না কন্ট্রোল করে । যে জিনিসে আসক্তি আছে সেটা থেকে সবকিছু দিক দিয়ে দূরে থাকুন । যেন চোখ খুললেই আসক্তি যেই জিনিসে আছে সেটাই নজর না পড়ে । নজরের অনেক দূরে ছুড়ে ফেলে দিন । তবেই পাবেন আসক্তি থেকে মুক্তি।
সংক্ষেপে দেখুনপুরনো পরিচিত কোন গন্ধ বা সুবাস নাকে এলে অতীতে স্মৃতিচারণ হয় কেন?
গন্ধ দ্বারা আনা স্মৃতিগুলিকে গন্ধযুক্ত স্মৃতি বলা হয়। গন্ধ-সংযুক্ত স্মৃতিগুলি আমাদের জীবনে একটি বড় প্রভাব ফেলে। যখন এই স্মৃতিগুলি ইতিবাচক হয়, তখন আমাদের শারীরিক সুস্থতা এবং মানসিক এবং মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়। যদিও আমরা প্রায়শই অতীত মনে রাখার জন্য ছবি দেখি, আসলে গন্ধ আমাদের মনে রাখতে সাহায্য করবিস্তারিত পড়ুন
গন্ধ দ্বারা আনা স্মৃতিগুলিকে গন্ধযুক্ত স্মৃতি বলা হয়। গন্ধ-সংযুক্ত স্মৃতিগুলি আমাদের জীবনে একটি বড় প্রভাব ফেলে। যখন এই স্মৃতিগুলি ইতিবাচক হয়, তখন আমাদের শারীরিক সুস্থতা এবং মানসিক এবং মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়। যদিও আমরা প্রায়শই অতীত মনে রাখার জন্য ছবি দেখি, আসলে গন্ধ আমাদের মনে রাখতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের স্ক্যানগুলি দেখায় যে গন্ধগুলি শক্তিশালী স্মৃতি নিয়ে আসে কারণ মস্তিষ্কের অঞ্চলগুলি তাদের প্রক্রিয়া করে। মস্তিষ্কের অঞ্চলগুলির গ্রুপ যা আবেগ, শেখার এবং স্মৃতি প্রক্রিয়াকরণের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত সেগুলিও গন্ধ প্রক্রিয়া করে। আপনি যখন কোনো কিছুর গন্ধ পান, গন্ধ প্রক্রিয়া করার জন্য, আপনার মস্তিষ্ক একই ক্ষেত্রগুলি ব্যবহার করে যা এটি আবেগ এবং স্মৃতি প্রক্রিয়া করার জন্য ব্যবহার করবে। এটি আমাদের সংবেদনশীল স্মৃতি মনে রাখতে সাহায্য করার জন্য গন্ধকে দুর্দান্ত করে তোলে! গন্ধ-সংযুক্ত স্মৃতির প্রভাব বোঝা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে তাদের ব্যবহার করতে সাহায্য করতে পারে । এমন বিশেষ গন্ধ আছে যা সবসময় আপনাকে আনন্দ দেয়? যখন আপনি কিছু জিনিসের গন্ধ পান, যেমন আপনার মায়ের পারফিউম বা আপনার প্রিয় খাবার, সেই গন্ধগুলি আনন্দদায়ক স্মৃতি নিয়ে আসতে পারে। এগুলিকে গন্ধ-সংযুক্ত স্মৃতি বলা হয় কারণ স্মৃতিগুলি গন্ধ (গন্ধ) দ্বারা আনা হয়। গন্ধ-সংযুক্ত স্মৃতি যে অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় প্রুস্ট প্রভাব ।এই নামটি এসেছে কারণ লেখক মার্সেল প্রুস্ট তার বই, সোয়ানস ওয়েতে লিখেছেন যে তিনি তার চায়ে ডুবিয়ে রাখা একটি পেস্ট্রির গন্ধ তার শৈশবের সাথে জড়িত আনন্দের ঝাঁকুনি নিয়ে আসে। এই দাবিটি মিস্টার প্রুস্টের অভিজ্ঞতার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে কিনা তা জানতে গবেষকদের কৌতূহলী করে তুলেছে।
গন্ধ এবং স্মৃতির মধ্যে সংযোগ কি?
ঘ্রাণ
আমাদের গন্ধের অনুভূতির জন্য এটি একটি অভিনব শব্দ। যদিও ঘ্রাণ এবং স্মৃতির মধ্যে সংযোগ সম্পর্কে খুব কমই চিন্তা করা হয় , এটি আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ। গন্ধ-সংযুক্ত স্মৃতি অত্যন্ত শক্তিশালী হতে পারে। ল্যাবরেটরিতে, গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন গন্ধের গন্ধ পেতে এবং মনের মধ্যে কী ধরনের স্মৃতি আসে তা দেখতে বলেন। গবেষকরা তারপর প্রতিটি স্মৃতি সম্পর্কে ফলো-আপ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন, যেমন এটি স্পষ্ট বনাম অস্পষ্ট বা আবেগপূর্ণ বনাম বিরক্তিকর কিনা। দেখা যাচ্ছে যে ঘ্রাণসংকেত (গন্ধ বা গন্ধ) চাক্ষুষ সংকেত, যেমন ছবি বা ফটোগ্রাফের চেয়ে স্পষ্ট এবং মানসিক স্মৃতি ট্রিগার করতে বেশি কার্যকর । আসলে, বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্করা ছবি বা শব্দের চেয়ে গন্ধের সাথে অনেক বেশি পুরানো স্মৃতি মনে রাখতে পারে । সুতরাং, মিঃ প্রুস্ট যদি তার প্রিয় প্যাস্ট্রির একটি ছবি দেখেন এবং যে চায়ে তিনি এটি ডুবিয়েছিলেন, তাহলে তার শৈশবের স্মৃতির সাথে তাকে সংযুক্ত করার মতো শক্তিশালী অভিজ্ঞতা নাও থাকতে পারে।
Speech delay কি এবং এটি কেন হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দুই বছর বয়সী শিশু প্রায় 50টি শব্দ বলতে পারে এবং দুই থেকে তিনটি শব্দের বাক্যও ব্যবহার করতে পারে। তিন বছরের মধ্যে, তার শব্দভাণ্ডারে প্রায় 1000 শব্দ যুক্ত হয় এবং সে তিন থেকে চারটি শব্দের বাক্য বলার চেষ্টা শুরু করে। এমতাবস্থায় কোনো শিশু যদি তা করতে না পারে তাহলে তাকে ‘স্পীচবিস্তারিত পড়ুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দুই বছর বয়সী শিশু প্রায় 50টি শব্দ বলতে পারে এবং দুই থেকে তিনটি শব্দের বাক্যও ব্যবহার করতে পারে। তিন বছরের মধ্যে, তার শব্দভাণ্ডারে প্রায় 1000 শব্দ যুক্ত হয় এবং সে তিন থেকে চারটি শব্দের বাক্য বলার চেষ্টা শুরু করে। এমতাবস্থায় কোনো শিশু যদি তা করতে না পারে তাহলে তাকে ‘স্পীচ ডিলে’র শ্রেণী তে রাখা যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এটি কোনো ভয়ের বিষয় নয়, তবে কখনও কখনও এটি শ্রবণ সমস্যা (hearing difficulty) বা স্নায়বিক (neurological) কারণেও হতে পারে।
যে শিশুরা জন্মের সময় দেরিতে কাঁদে তারা দেরিতে কথাও বলতে শুরু করে। এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্ডিস হলে, বা স্বাভাবিক প্রসবের সময় শিশুর মস্তিষ্কের বাম পাশে আঘাত পেলেও শিশুর শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। আমাদের এটা বোঝা দরকার যে শোনা এবং বলার মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যে শিশুরা ঠিকমতো শুনতে পায় না তাদের সব কথা শিখতে ও বলতে অসুবিধা হয়। যখন একটি শিশুর বয়স ছয় মাস হয়, তখন সে 17 ধরনের শব্দ চিনতে পারে, যা তাকে যে কোনো ধরনের ভাষা শিখতে ও বুঝতে সাহায্য করে।
স্যাফরন একজাতীয় মসলার নাম। এই মসলা কোন রান্নায় ব্যবহৃত হয়?
বিভিন্ন ভাষায় জাফরানকে বলা হয়: জাফরান (আরবি ও হিব্রু), জাফরান (ফার্সি), ফ্যান হং হুয়া (চীনা ম্যান্ডারিন), সাফরান (ফরাসি, জার্মান), জাফরানো (ইতালীয়), আজফ্রান (স্প্যানিশ), ক্রোকোস (গ্রীক) , এবং কেসর (হিন্দি) (1)।
বিভিন্ন ভাষায় জাফরানকে বলা হয়: জাফরান (আরবি ও হিব্রু), জাফরান (ফার্সি), ফ্যান হং হুয়া (চীনা ম্যান্ডারিন), সাফরান (ফরাসি, জার্মান), জাফরানো (ইতালীয়), আজফ্রান (স্প্যানিশ), ক্রোকোস (গ্রীক) , এবং কেসর (হিন্দি) (1)।
সংক্ষেপে দেখুনCold, Wind, Swirling Mist, Charming Lannai একটি ছবির নাম। এই ছবিটি কে একেছিলো?
The most expensive painting by a group of elephants, is 'Cold Wind, Swirling Mist, Charming Lanna I', which sold for 1.5 million baht (£20,660, US$39,000) on 19 February 2005 at Maesa Elephant Camp, Chiang Mai, Thailand
The most expensive painting by a group of elephants, is ‘Cold Wind, Swirling Mist, Charming Lanna I’, which sold for 1.5 million baht (£20,660, US$39,000) on 19 February 2005 at Maesa Elephant Camp, Chiang Mai, Thailand
সংক্ষেপে দেখুনএকান্নবর্তী পরিবার বিলুপ্তির কারণ কি?
একটি একান্নবর্তী পরিবারকে একসাথে দেখার বিষয়টি একদিকে যেমন আনন্দের, অন্যদিকে তা কষ্টও জাগায়। এই অর্ধশতক আগেও তো গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই ছিল এমন যৌথ পরিবার, আর এখন কিনা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খুঁজে ফিরতে হয় তাদের। এ ধরনের একান্নবর্তী পরিবার নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের ঐতিহ্যের সাথে। পরিবারের সকলবিস্তারিত পড়ুন
একটি একান্নবর্তী পরিবারকে একসাথে দেখার বিষয়টি একদিকে যেমন আনন্দের, অন্যদিকে তা কষ্টও জাগায়। এই অর্ধশতক আগেও তো গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই ছিল এমন যৌথ পরিবার, আর এখন কিনা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খুঁজে ফিরতে হয় তাদের। এ ধরনের একান্নবর্তী পরিবার নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের ঐতিহ্যের সাথে। পরিবারের সকল সদস্য একসাথে থাকছেন, পরিবারের যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ করতে বসছেন সকলে মিলে, চাচাতো ভাই বোনেরা সবাই একসঙ্গে বেড়ে উঠছে, রাত্রে দাদির আঁচল ধরে রূপকথার গল্প শুনতে বসছে একসাথে- এমনই ছিল পরিবারগুলোর আবহ। যেন এক নিবিড় বন্ধন, আত্মার আত্মীয়তায় জড়িয়ে থাকতেন সবাই।
সময়ের আবর্তনে এসব কোনো এক উপন্যাসের দৃশ্য মনে হচ্ছে। আমাদের আজকের প্রজন্মের সৌভাগ্য হয়নি এমনভাবে বেড়ে ওঠার। আমরা একক পরিবারে বেড়ে উঠেছি। বিচ্ছেদের হার দেখে, এখন তো এই একক পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কিত হওয়ার সময় চলে এসেছে। এমনটি কেন হলো? অনেকেই অবশ্য সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের উপর দায় চাপান। কিন্তু কেবলমাত্র সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের জন্য সমাজের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানটি এভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেছে এটি মেনে নেয়া যায় না। এর পেছনে কাজ করেছে আরো বড় কোনো নিয়ামক। সেটি নিয়েই আলোচনা করব আজকের লেখায়।
পরিবারিক কাঠামোতে এই পরিবর্তনের মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা যায় সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনকে। শিল্পায়ন ও নগরায়নের পরপরই মূলত এই পরিবর্তনগুলো আসতে শুরু করে। এই যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া ছাড়াও পরিবর্তন এসেছে পরিবারের কর্তৃত্বে, পরিবারে নারীর অবস্থান বদলেছে, সঙ্গী-সঙ্গিনী নির্বাচনে এসেছে সদস্যদের স্বাধীনতা, পরিবারের দায়-দায়িত্বও কমেছে অনেকটা। চলুন দেখে নেই পরিবর্তনগুলো।
আগেকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছিল মূলত কৃষিভিত্তিক। ক্ষেতে বা খামারে পুরো পরিবার একইসাথে কাজ করে নিজেদের জীবিকার যোগান দিতো। এই ক্ষেত বা খামারের মালিকানা থাকতো পরিবারের সকলের, তাই দেখা যেত চাচাতো ভাইয়েরা একসাথে একই ক্ষেতে কাজ করছেন। পরিবারের একেকজনকে একেক কাজের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হতো, যার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হতো তাকে তা-ই করতে হতো।
পরিবারের অন্যান্য দায়িত্বও আরো বেশি ছিল তখন। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার তেমন একটা প্রচলন ছিলো না, পরিবারের হাতেই ছিল শিক্ষা ও কাজের জন্য প্রশিক্ষণের ভার। কারো অসুখ হলে সেবাদান, শিশুদের লালন পালন, বৃদ্ধদের যত্নআত্তি করা- এসব দায়িত্বই পালন করতে হতো পরিবারকে। এরপর শিল্পায়ন হলো, আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠলো বিভিন্ন ফ্যাক্টরি আর প্রতিষ্ঠান। জমির উপর নির্ভর করে সবাই একসাথে থাকার প্রয়োজনীয়তা আর রইলো না। কাজের সন্ধানে যার যেখানে সুযোগ হলো সেখানে ছুটতে লাগলো। এক্ষেত্রে বিশাল পরিবারের চেয়ে একক পরিবারেই সুবিধা বেশি।
এখন কাজ আর কারো ওপর অর্পিত হয় না, যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করে নিতে হয়। যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে আসলো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা। পরিবার মুক্তি পেল শিক্ষা দান ও কাজের প্রশিক্ষণ দেয়ার ভার থেকে। খাদ্য উৎপাদনের সম্পূর্ণ ভারও পরিবারের কাঁধে আর নেই, এর জন্যে ভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। অসুস্থদের সেবার জন্যে গড়ে উঠেছে প্রচুর হাসপাতাল। আমাদের সমাজে বাচ্চারা এখনো অনেকাংশে পরিবার দ্বারা লালিত পালিত হচ্ছে, বৃদ্ধরা সেবা পাচ্ছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে এরজন্যে আলাদা লোক নিয়োগ দেয়া, চাইল্ড কেয়ার সার্ভিস বা বৃদ্ধাশ্রমের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগে এসব কারণে পরিবারের প্রয়োজনীয়তা ছিল অনস্বীকার্য। এখন সেই প্রয়োজনীয়তা কমে গেছে। তাই পরিবার প্রথার ভাঙ্গনও ত্বরান্বিত হয়েছে। তবে এর মানে এই নয় যে পরিবারগুলোর মধ্যে বন্ধন সম্পূর্ণ মুছে গেছে। পরিবারগুলো ভিন্ন হয়ে ঘর বাঁধলেও বন্ধন সম্পূর্ণ মুছে যায়নি, তবে আগের চেয়ে যে কমেছে এটি সত্যি।
পরিবারে কর্তৃত্বের পরিবর্তন এসেছে। আগেকার পরিবার প্রথায় সিদ্ধান্ত নেয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা ছিল বয়োবৃদ্ধদের হাতে। কাজ এবং জীবন সম্পর্কে যেকোনো পরামর্শ নেয়ার জন্য সবাই তাদের দ্বারস্থ হতো। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা উপদেশ দিতেন। কিন্তু শিল্পায়নের ফলে এ চিত্র বদলে গেছে। নতুন দুনিয়ায় পরামর্শের জন্য কেউ এখন বয়স্কদের ওপর ভরসা করতে পারেন না। নতুন প্রজন্মের চাকরির জন্য বা বাচ্চাদের শিক্ষাদীক্ষার জন্য পরামর্শ দেয়ার ক্ষমতাও বয়স্করা রাখেন না। এসকল কারণেই বয়স্কদের হাত থেকে সংসারের কর্তৃত্ব ফস্কে গেছে।
পরিবর্তন এনেছে বিবাহ ও যৌনতার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতেও। আগেকার সময়ে বিবাহ ছিল এক ধরনের অর্থনৈতিক চুক্তির মতো। দুই পরিবার তাদের সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী সন্তানদের বিবাহ ঠিক করতো। পাত্র-পাত্রীর প্রেম ভালোবাসা নয়, দুই পক্ষের সম্পদ ও মর্যাদাই সেখানে মূখ্য বিবেচ্য বিষয় হতো। তবে এ চিত্র বদলে গেছে প্রায়, বিবাহের ক্ষেত্রে এখন আর পারিবারিক পছন্দ মেনে নিতে তরুণরা আগ্রহী নয়। পরিবারের সিদ্ধান্তের চেয়েও তাদের কাছে গুরুত্ব বাড়ছে নিজেদের পছন্দ ও অনুভূতির।
এসব কারণে শিল্পায়নের ফলে মানুষের আদর্শ ও চিন্তাধারাতে পরিবর্তন এসেছে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের উদ্ভব ঘটেছে। মানুষ এখন পরিবার কাকে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করে, তার চেয়ে নিজের কাকে ভালো লাগে তাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। এছাড়া এখন বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী তাদের আগের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের ভিন্ন বাসস্থানে সরে যাচ্ছে, তারা নিজেদের সংসার সম্পূর্ণ নিজেদের মতো করে সাজাতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
এসব বিষয় থেকেও টের পাওয়া যায় মানুষের আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠার প্রবণতা। এছাড়া ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের উদ্ভবের কারণে খোলামেলা যৌনতারও পসার ঘটেছে। সমাজ বা ধার্মিক অনুশাসনের চেয়ে ব্যক্তিগত চাহিদাই গুরুত্ব পায় তরুণদের মাঝে। যা-ই হোক, এতগুলো কারণ দেখানোর পরও একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়। শিল্পায়ন তো কেবল সুযোগ করে দিল যৌথ পরিবার ভাঙ্গার, তাতেই হুড়মুড় করে ভেঙ্গে গেল এ আদি প্রতিষ্ঠানটি? তবে কি এর ভিতই নড়বড়ে ছিল? এ প্রশ্নও অযৌক্তিক নয়।
যৌথ পরিবারে যে কেবল সুবিধাই ছিল তা নয়। একটা বিশাল পরিবারে ছেলে-মেয়েদের নিজেদের স্বাধীনতা, গোপনীয়তা খুব কমই থাকতো। অধিকাংশ সময়ই দেখা যেত বয়স্কদের অযৌক্তিক মতামত চাপিয়ে দেয়া হতো তাদের ওপর। আর এতজন একসাথে থাকার ফলে ঝগড়া-বিবাদও খুব দুর্লভ কিছু ছিলো না। প্রায়ই দেখা যেত, একজন অন্যজনের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়েও নাক গলিয়ে বসে আছে। এসব বিষয় থেকেও মানুষ মুক্তি চাইতো।
এগুলোও যৌথ-পরিবার প্রথা ভাঙ্গার একটা বড় কারণ। তাই এ পরিবর্তনের সবগুলোকেই নেতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত করাটা অনুচিত হবে। দিন দিন মানুষের একা হয়ে যাওয়া, বন্ধন কমে আসা এগুলো নেতিবাচক সন্দেহ নেই, তবে ইতিবাচক কিছু বিষয়ও আছে। আগের মতো বস্তুগত নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ায় এখনকার আত্মীয়তার সম্পর্কগুলোকে অনেকটাই বিশুদ্ধ অনুভূতির সম্পর্ক বলা যায়, যেগুলো কেবলমাত্র স্বার্থের জন্য রক্ষিত নয়। ব্যক্তিস্বাধীনতার ফলে মানুষ নিজের মতো করে নিজের জীবনকে সাজিয়ে নেয়ার একটা সুযোগ পাচ্ছে। বাড়ছে প্রত্যেকের নিজের পছন্দ, মতামত ও চাহিদার মূল্য।
বস্তুত ইতিবাচক বা নেতিবাচক দিক দেখে-শুনে এ পরিবর্তন আসে নি। পরিবর্তন এসেছে সমাজের অন্য পরিবর্তনগুলোর সাথে নতুন করে খাপ খাইয়ে নিতে। শিল্পায়ন, নগরায়নের সাথে খাপ খাইয়ে নিতেই পরিবার বদলেছে নিজেকে। সময়ের সাথে সাথে হয়তো এ প্রতিষ্ঠানটি বদলে যাবে আরো।
সংক্ষেপে দেখুন