হোমপেজ/ক্রিসমাস পালনের রীতি
সাইন আপ করুন
লগিন করুন
পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? আপনার ইমেইল এড্রেস দিন। ইমেইলের মাধ্যমে আপনি নতুন পাসওয়ার্ড তৈরির লিংক পেয়ে যাবেন।
আপনি কেন মনে করছেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই ব্যক্তিকে রিপোর্ট করা উচিৎ?
খ্রিষ্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস ডে বা শুভ বড়দিন (২৫ ডিসেম্বর)। এ উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা সভাসহ নানা উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে এ সম্প্রদায়ের মানুষ। খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিষ্ট মানবজাতির উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিলেন। হিংসবিস্তারিত পড়ুন
খ্রিষ্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস ডে বা শুভ বড়দিন (২৫ ডিসেম্বর)। এ উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা সভাসহ নানা উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে এ সম্প্রদায়ের মানুষ।
খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিষ্ট মানবজাতির উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিলেন। হিংসা বিদ্বেষপূর্ণ মানুষকে সুপথে আনার জন্যই তার আগমন হয়েছিল বলে মনে করেন এ সম্প্রদায়ের মানুষ।
দিনটি উপলক্ষে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও এদিনে ছুটি থাকে। বন্ধু-বান্ধব, মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন বিনোদন কেন্দ্রসহ একে অপরের বাড়িতে বেড়ান। সবার গায়েই থাকে নতুন পোশাক। শহরজুড়ে করা হয় হরেক রকম রঙ-বেরঙের টুনি বাল্বের আলো। ছোট ছোট কাটা আপেল, কমলা ও পপকর্ন দিয়ে সাজানো হয় ক্রিসমাস। উপহার নেবে নেচে নেচে মজার মজার উপহার বহন করা সান্তা ক্লজের কাছ থেকে।
বিভিন্ন গির্জা ও উৎসব কেন্দ্রগুলোতে শিশুদের নানা উপহার দিয়ে বেড়ান সান্তা ক্লজ।
এবার জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশে বড়দিন কিভাবে পালন হয়-
বাংলাদেশ
১৬ শতকে পর্তুগিজরা বাংলাদেশে খ্রিষ্টধর্ম নিয়ে আসেন। এ দেশে প্রথম গির্জাটি তৈরি হয় ১৫৯৯ সালে পুরাতন যশোরের কালীগঞ্জের কাছে সুন্দরবন এলাকায়। ভারতের কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা জব চার্নকই প্রথম দিবসটি উদযাপন করেন। ১৬৬৮ সালে হিজলির পথে যাওয়ার সময় সুতানুটি গ্রামে বড়দিন উৎসব উদযাপনের জন্য চার্নক যাত্রাবিরতি করেন। এ অঞ্চলে সেটিই ছিল ইংরেজদের প্রথম বড়দিন উদযাপন। দিনটিতে খ্রিষ্টানরা আনন্দ ফুর্তি করে এবং একে অপরকে শুভেচ্ছা কার্ড ও উপহার দেয়। তৈরি হয় মজার মজার খাবার। গির্জায় গির্জায় আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনা।
ভারত
ভারতে খুব ঘটা করে বড়দিন পালন করেন খ্রিষ্টানরা। ক্রিসমাস ট্রি সাজায় আমগাছ ও কলাগাছ দিয়ে। এ দিনে দক্ষিণ ভারতে- তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ঘরে ছোট প্রদীপ জ্বালায়। তবে দেশটির শহরের খ্রিষ্টানরা আবার পশ্চিমাদের মতোই বড়দিন উদযাপন করেন।
আমেরিকা
ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে আমেরিকানরাও জার্মানদের মতই সরেস। ক্রিসমাসের আগের দিন বাচ্চারা ক্রিসমাস ট্রির নিচে সুন্দর স্টকিংস ঝুলিয়ে রাখে যেখানে সান্তা উপহার রেখে যান। সকালে ওঠে উপহার পাবার লোভে তারা জলদি ঘুমাতে চলে যায়। তারা বিশ্বাস করে, সান্তা ৬টি রেইন ডিয়ারে গাড়িতে চড়ে বিশাল ঝোলাভর্তি চকোলেট, ক্যান্ডি আর উপহার নিয়ে এসে তাদের স্টকিং আর ক্রিসমাস ট্রির নিচে রেখে যাবেন।
রাশিয়া
পৃথিবীর সব দেশে ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস পালন করা হলেও রাশিয়ায় কিন্তু তা পালিত হয় ৭ জানুয়ারি। এর কারণ হলো রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চ ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে পুরনো জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে থাকেন। কেউ চাইলে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করতে পারে। তবে সেখানে সবাই ৭ জানুয়ারিই বড়দিন পালন করে থাকে।
বেলজিয়াম
বেলজিয়ামে ৬ ডিসেম্বর ‘সিন্টারক্লজ বা সেইন্ট নিকোলাস’ নামে অনুষ্ঠান হয়। এটি ক্রিসমাস থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন আয়োজন। সান্তাক্লজকে বেলজিয়ামে বলা হয় ‘কেরস্টম্যান’বা ‘লি পেরে নোয়েল’। এ দিনে সান্তা ছোটদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন।
ব্রাজিল
ব্রাজিলে সান্তা ক্লজকে পাপাই নোয়েল বলে ডাকা হয়। এদের আচার-অনুষ্ঠান অনেকটাই আমেরিকার সঙ্গে মিলে যায়। ব্রাজিলে যারা একটু বেশি ধনী, তারা ক্রিসমাসে খাবারের তালিকায় মুরগি, টার্কিসহ বিভিন্ন সুস্বাদু পদ রাখেন। এছাড়া চকোলেট আর কনডেন্সড মিল্কের মিশ্রণে তৈরি মিষ্টিও থাকে। এর নাম ব্রিগেডেইরো। ব্রাজিলের সব বাসিন্দাই বড়দিন উপলক্ষে ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়ে থাকে।
জার্মানি
জার্মানরা বড়দিন উপলক্ষে তাদের ঘর সাজাতেই বেশি ভালোবাসে। জার্মানিতে ঘর সাজানোর জন্য খুবই সুন্দর জিনিস ব্যবহার করা হয়। তারা তাদের জানালায় কাঠের ফ্রেমে ইলেক্ট্রিক মোমবাতি জ্বালিয়ে তার সামনে কাগজ বা প্লাস্টিকের রঙ-বেরঙের ছবি টানিয়ে দেয়, যা রাতের বেলা বাইরে থেকে দেখতে খুবই মনোরম লাগে।
ফ্রান্স
ফ্রান্সে ক্রিসমাসকে বলা হয় নোয়েল। আর ক্রিসমাস ফাদার বা সান্তা ক্লজকে বলা হয় পেরি নোয়েল। ফ্রান্সের সবাই ক্রিসমাস ট্রিকে পুরনো ধাঁচের সাজে সাজাতেই বেশি ভালোবাসে। তারা তাদের ট্রির ওপরে লাল রঙের রিবন মুড়িয়ে তার সঙ্গে সাদা মোমবাতি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজায়।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে বড়দিনটি শুরু হয় ক্রিসমাস ট্রির নিচে রাখা উপহারের প্যাকেট খোলা দিয়ে। এরপর ক্রিসমাসের দুপুরের খাবার পরিবারের সবাই একসঙ্গে খেয়ে থাকে। টার্কি আর মুরগির মাংস দিয়েই চলে খাবার পর্ব। এরপর শুরু হয় চা পানের আসর। আর রাতে পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে চলে বারবিকিউ পার্টি।
পর্তুগাল
পর্তুগালেও বড়দিনের অন্যতম আকর্ষণ ক্রিসমাস ফাদারের উপহার। বড়দিনের আগের দিন সন্ধ্যায় অর্থাৎ ক্রিসমাস ইভ-এ ট্রির নিচে বা চিমনির সামনে ঝোলানো মোজার মধ্যে ফাদার উপহার দিয়ে যান। আর ক্রিসমাস ইভ-এ মাঝরাতে সিদ্ধ আলু আর নোনতা শুকনো কড মাছ দিয়ে তারা ভোজ সেরে থাকে।
সুইডেন
সুইডেনে বড়দিন আয়োজনে অন্যতম দিন হলো ক্রিসমাস ইভ। সুইডেনবাসীরা একে অপরকে উপহার দিয়ে আর শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্রিসমাস উদযাপন করে থাকে।
ইতালি
ইতালিতে বড়দিন উদযাপন শুরু হয় ৮ ডিসেম্বর থেকে। শেষ হয় ৬ জানুয়ারি। সেদিন ওখানকার সবাই ক্রিসমাস ট্রি তৈরি করে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের পাশাপাশি সেইন্ট স্টিফেনস ডেও পালন করে তারা। ইতালিতে বড়দিনে ওখানকার বাচ্চারা রাখাল সেজে পাইপ বাজিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বড়দিনের গান গায় আর ছড়া কাটে। বিনিময়ে তাদেরকে টাকা দেয়া হয়। আর সেই টাকা দিয়ে ওরা বড়দিনের উপহার কেনে।