শেয়ার করুন
সাইন আপ করুন
লগিন করুন
পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? আপনার ইমেইল এড্রেস দিন। ইমেইলের মাধ্যমে আপনি নতুন পাসওয়ার্ড তৈরির লিংক পেয়ে যাবেন।
আপনি কেন মনে করছেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই ব্যক্তিকে রিপোর্ট করা উচিৎ?
৭ই মার্চের ভাষণ
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (যা বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নামে পরিচিত) অনুষ্ঠিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক দেয়া এক ঐতিহাসিক ভাষণ। উক্ত ভাষণ বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করে বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে শেষ হয়। ভাষণটি ১৮ মিনিট স্থায়ী হয়।
৭ মার্চের ভাষণ রচনা
ভূমিকা
১৯৭০ সালের পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ 167 আসনে বিজয়ী হয়। বাঙালিরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও সেই সময় ক্ষমতায় আসতে পারেনি। পাকিস্তানীরা বাঙ্গালীদের উপর ক্ষমতা হস্তান্তরের অস্বীকৃতি জানালে সেই সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
পহেলা মার্চ আকস্মিকভাবে জেনারেল ইয়াহিয়া খান সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত করে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেয়। এই ঘোষণার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও আক্রোশে ফেটে পড়ে বাঙালিরা। তখনই বাঙালিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকে তাকিয়ে থাকে। অবশেষে 7 এই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐতিহাসিক ভাষণ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বর্তমান সরোয়ারদী উদ্যানে বক্তব্য দেন।
ভাষণের বিষয়বস্তু
7 মার্চের রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার জন্য রেসকোর্স ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। সেদিন নিউজ উইক ম্যাগাজিনের ভাষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি উপাধি দিয়েছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালীদের একটি স্বপ্নের কথা বলতে নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন এসেছিলেন নির্দেশের অপেক্ষায় রত উত্তাল বাঙালি জনসমুদ্র কে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান জানাতে।
বঙ্গবন্ধু তাঁর সংক্ষিপ্ত অথচ তেজস্বী ভাষণে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালিদের বঞ্চনার ইতিহাসের ব্যাখ্যা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে বাঙালিদের দ্বন্দ্বের স্বরূপ উপস্থাপন, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি বিশ্লেষণ ও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানে তাঁর সর্বাত্মক চেষ্টা, সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ, প্রতিরোধ সংগ্রাম শেষাবধি মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেওয়ার ইঙ্গিত, শত্রুর মোকাবিলায় গেরিলাযুদ্ধের কৌশল অবলম্বন, যেকোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পরামর্শদান ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরার পর ঘোষণা করেন:
‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।…এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’
৭ই মার্চের ভাষণের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
বঙ্গবন্ধুর 7 ই মার্চের ভাষণ ছিল একজন দক্ষ কৌশলীর সুনিপুণ বক্তব্য। তিনি সেদিন মূলত কৌশলে বাঙ্গালীদের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রকৃত স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার ঘোষণাটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৌশলে দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেদিন কের কৌশল ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিরা সংখ্যালঘিষ্ঠ পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে কেন? বরংচ সংখ্যালঘিষ্ঠ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক।
সেদিনের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পর এই বাঙালিরা স্বাধীনতার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে। বাঙ্গালীদের মনে সেদিন স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ নেওয়ার ইচ্ছা আরো উজ্জীবিত হয়। এর ফলশ্রুতিতে 25 শে মার্চ যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতার ডাক দেন তখন বাঙালিরা সেই ডাকে সাড়া দিয়ে নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরস্ত্র বাঙালিদের সশস্ত্র করে তোলে। তিনি বলেছিলেন তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। সেই ভাষণ এর ফলে মুক্তিযোদ্ধারা অকাতরে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দিতে কোন পিছুপা হয়নি।
বলা যায়, এই একটি ভাষণ একটি জাতিরাষ্ট্র, বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেসকো এ ভাষণকে ৩০ অক্টোবর ২০১৭ বিশ্ব–ঐতিহ্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’–এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
উপসংহার
মূলত 7 মার্চ কি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা বলে বিবেচনা করা হয়। কারণ এই দিন শেখ মুজিবুর রহমান পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীদের মনে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গ্রহণ করার জন্য ইচ্ছা জাগ্রত করে দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণার ফলে বাঙালিরা রাতারাতি সশস্ত্র হয়ে ওঠে। সমগ্র বাংলাদেশকে একটি অগ্নি গোলায় পরিণত করে। তাই সাথে মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।
৭ই মার্চের ভাষণ লিখিত pdf
৭ই মার্চের ভাষণ লিখিত pdf ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন