পেট্রলবোমার আগুন থেকে বাঁচতে কি কি করবেন?
শেয়ার করুন
সাইন আপ করুন
লগিন করুন
পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? আপনার ইমেইল এড্রেস দিন। ইমেইলের মাধ্যমে আপনি নতুন পাসওয়ার্ড তৈরির লিংক পেয়ে যাবেন।
আপনি কেন মনে করছেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই ব্যক্তিকে রিপোর্ট করা উচিৎ?
রাজধানীসহ সারা দেশ এখন অগ্নিসন্ত্রাসের আতঙ্কে কাঁপছে। প্রতিদিন গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে রাজধানীতে, মফস্বল শহরে কিংবা মহাসড়কে —সুযোগ পেলেই যানবাহনে আগুন দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। আর এ জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে পেট্রলবোমা অথবা সরাসরি বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে।
পেট্রল অত্যন্ত দাহ্য তরল।
পানিতে দিয়ে নেভানো যায় না পেট্রলের আগুন। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা না এলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই জ্বলে-পুড়ে কয়লা হয়ে যাবে গোটা বাসটাই। আগুন যদি বাসের জ্বালানি ট্যাংক কিংবা গ্যাস সিলিন্ডার পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তাহলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হতে পারে। বাসকে যদি আগুনের হাত থেকে না-ও বাঁচানো যায়, নিজের প্রাণটা হয়তো আপনি বাঁচাতে পারবেন —এ ক্ষেত্রে নিজে সচেতন থাকা জরুরি।
বাসে যাত্রার সময় অবশ্যই সজাগ থাকবেন। এ সময় ভুল করেও ঘুমিয়ে পড়বেন না। দেখা যায়, ঘুমন্ত যাত্রী বা বাসের ঘুমন্ত কর্মচারীরাই আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছেন। বাসে ওঠার পর অবশ্যই জ্বানালা বন্ধ করে রাখুন, দূর থেকে পেট্রলবোমা ছুড়লে আগুন যেন সরাসরি বাসের ভেতরে না ঢোকে।
আগুন লাগলে মাথা ঠাণ্ডা করে বাস থেকে নামুন। হুড়োহুড়ি করে নামার চেষ্টা করলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
গায়ে আগুন ধরে গেলে দৌড়াবেন না। এতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। সম্ভব হলে বাস থেকে বেরিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি দিন।
এতে অক্সিজেনের প্রবাহ বন্ধ হবে এবং আগুন নিভে যাবে। পেট্রলের আগুন পানিতে নেভে না, বরং আগুনকে আরো উসকে দেয়। তাই পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা না করে অক্সিজেনের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করুন। মোটা কাপড়জাতীয় জিনিস দিয়ে আগুন লাগা জায়গাটা ঢেকে ফেলুন।
রাজধানীর প্রায় প্রতিটা দোকানে বা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার থাকে। এতে কার্বন ডাই-অক্সাইড কিংবা অগ্নিনির্বাপক ড্রাই পাউডার থাকে। এগুলো জোগাড় করে দ্রুত শরীরের আগুন নিভিয়ে ফেলতে পারেন।
নিজে আক্রান্ত নন, কিন্তু অন্যকে পেট্রলবোমার আগুনে আক্রান্ত হতে দেখছেন, আপনার চেষ্টায়ই বাঁচতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তি। মোটা কাপড়, অগ্নিনির্বাপক ফোম কিংবা কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস জোগাড় করা আক্রান্ত ব্যক্তির চেয়ে আপনার জন্য তুলনামূলক সহজ। তাই এই কাজের দায়িত্ব আপনি নিলে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আক্রান্ত ব্যক্তির পোড়া স্থানে পর্যাপ্ত পানি ঢালার ব্যবস্থা করুন। এতে দ্রুত আক্রান্ত স্থানের তাপমাত্রা কমবে, ফলে শরীরের কোষের ক্ষতি কম হবে।
আপনি যদি বাসের চালক বা কর্মী হন, তাহলে একটা কথা মনে রাখবেন, বেশিক্ষণ একই স্থানে বাস দাঁড় করিয়ে রাখবেন না। দাঁড়ানো গাড়িতে সরাসরি তেল ছিটিয়ে আগুন দেওয়া সহজ। আবার বাসে আগুন লাগলে দ্রুত বাস নিয়ে ছোটার চেষ্টা করবেন না। বরং ধীরে-সুস্থে নিরাপদ জায়গায় বাস দাঁড় করান, যাতে অন্যের ক্ষতি না হয়। তারপর আগুন নেভানোর পদক্ষেপ নিন।
বাসের কর্মীরা সব সময় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের ফোন নম্বর রাখুন। অথবা ৯৯৯-তে কল করে জরুরি সেবা নিতে পারেন। অগুন লাগলে ওই সময় যাত্রীদের কী করণীয়, এমন নির্দেশনা সংবলিত সচিত্র পোস্টার টাঙিয়ে রাখুন বাসের ভেতর।
অবশ্যই বাসে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, লেপ-তোশক জাতীয় জিনিস রাখুন। আগুন লাগলে হয়তো শুরুতেই সেটাকে থামিয়ে দেওয়া যাবে, এগুলো যদি বাসে থাকে।
বাসে ফার্স্ট এইড বক্স বা প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম রাখুন, কেউ দগ্ধ হলে দ্রুত যেন সেবা পান। গাড়িতে ফায়ার সার্ভিস বা পুলিশের নাম্বার সাঁটিয়ে রাখুন, যাতে আপনি সুযোগ না পেলেও অন্য কেউ তাঁদের ফোন দিতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা, আগুনসন্ত্রাসের হাত থেকে বাঁচতে হলে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে, সচেতন থাকতে হবে। তাহলেই হয়তো বেঁচে যাবে আপনার ও সহযাত্রীদের প্রাণ।
সূত্র : বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স