লাল রং একটি ষাঁড়কে কেন এত রাগান্বিত করে?
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
শেয়ার করুন
সাইন আপ করুন
লগিন করুন
পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? আপনার ইমেইল এড্রেস দিন। ইমেইলের মাধ্যমে আপনি নতুন পাসওয়ার্ড তৈরির লিংক পেয়ে যাবেন।
আপনি কেন মনে করছেন এই প্রশ্নটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই উত্তরটি রিপোর্ট করা উচিৎ?
আপনি কেন মনে করছেন এই ব্যক্তিকে রিপোর্ট করা উচিৎ?
তৃণভোজী প্রাণী (যেমন, গরু, ছাগল) লাল রং দেখতে পায় না
অর্থাৎ ওরা বর্ণান্ধ। ষাঁড়ও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। যেহেতু এরা লাল রং দেখতেই পায় না, তাই তা দেখে রেগে যাওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। মার্কিন বিজ্ঞানী টেম্পল গ্র্যান্ডিনের লেখা ‘ইমপ্রুভিং অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার’ বইয়ে বলা হয়েছে, গবাদিপশুদের চোখের রেটিনায় লাল রং গ্রহণ করার মতো ‘রিসেপ্টর’ নেই। সোজা বাংলায় বললে লাল রং গ্রহণ করার মতো ক্ষমতা ওদের চোখের রেটিনায় প্রাকৃতিকভাবেই নেই।
এ কারণে ওরা শুধু হলুদ, সবুজ, নীল ও বেগুনি রং দেখতে পায়। সুস্থ মানুষের চোখের পেছনের দিকে রং শনাক্ত করার জন্য তিন ধরনের ‘কোন সেল’ (Cone Cell) রয়েছে। যেগুলো লাল, সবুজ ও নীল রং শনাক্তে সাহায্য করে। ষাঁড়ের ক্ষেত্রে লাল রং শনাক্তের ‘কোন সেল’ না থাকায় এরা রংটি দেখতে পায় না। এ অবস্থাকে বলা হয় প্রোটানোপিয়া। যার ফলে লাল রঙের কাপড়কে ওরা অনেকটা হলুদাভ ধূসর রঙের দেখে।
তাহলে ষাঁড় কেন রেগে যায়
ম্যাটাডোর যখন লাল রঙের কাপড়টা নাড়াচাড়া করে, তখন ষাঁড়ের সামনে আসলে হলুদাভ ধূসর রঙের এক কাপড়ই নড়ে ওঠে। এটা ঠিক যে এতে ষাঁড়ের মনে একধরনের বিভ্রম তৈরি হয়। সবচেয়ে বড় কথা, বুলফাইটিংয়ের জন্য ষাঁড়গুলোকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। আর ক্ষিপ্র প্রজাতির ষাঁড়ই বেছে নেওয়া হয় বুলফাইটিংয়ের জন্য। এরা এতটাই চড়া মেজাজের হয় যে চোখের সামনে যা-ই ধরা হোক না কেন, তেড়ে আসবেই। আর ম্যাটাডোররাও ষাঁড়দের রাগিয়ে তোলায় ওস্তাদ।
২০০৭ সালে ডিসকভারি চ্যানেলের ‘মিথবাস্টার্স’ অনুষ্ঠানে ষাঁড়দের ওপর তিন ধরনের পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। প্রথম পরীক্ষায় লাল, নীল ও সাদা রঙের তিনটি পতাকা রাখা হয়েছিল। ষাঁড় পর্যায়ক্রমে সব কটিকেই আক্রমণ করে। দ্বিতীয় পরীক্ষায় তিনটি পুতুলকে লাল, নীল ও সাদা রঙের জামা পরিয়ে রেখে দিলে সব কটিকেই আক্রমণ করে। বরং ষাঁড়গুলো লালা জামা পরা পুতুলটিকে আক্রমণ করে সব শেষে! আর তৃতীয় পরীক্ষায় তিন ম্যাটাডোরকে তিন রঙের জামা পরিয়ে ষাঁড়ের সামনে দাঁড় করানো হয়। যাঁদের মধ্যে লাল জামা পরা ব্যক্তিটি স্থির দাঁড়িয়ে ছিলেন আর অন্য দুজন এদিক–সেদিক নড়াচড়া করছিলেন। দেখা যায়, অন্য দুই ম্যাটাডোরকে আক্রমণ করতে ষাঁড় তেড়ে গেলেও লাল জামা পরা ব্যক্তির দিকে ঘুরেও তাকায় না! এ পরীক্ষা থেকেই বোঝা যায়, ষাঁড় আসলে লাল রঙের জন্য রেগে যায় না; বরং কাপড়ের নড়নচড়ন ওদের রাগিয়ে তোলে, সেটা যে রঙের কাপড়ই হোক না কেন।
এটা তো জানা গেল যে ষাঁড় লাল রঙের জন্য রেগে যায় না। তাহলে কি লাল জামা পরে ষাঁড়ের সামনে যাওয়া ঠিক হবে? একদমই না। শিশুদেরও এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া জরুরি। মনে রাখবেন, জামা আপনি যে রঙেরই পরুন না কেন, ষাঁড়ের সামনে এমন আচরণ করা যাবে না, যা ওদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাবধানের মার নেই!
সূত্রঃ প্রথম আলো